• লা লিগা
  • " />

     

    রিয়াল মাদ্রিদের টানা চতুর্থ এল ক্লাসিকো জয়

    রিয়াল মাদ্রিদের টানা চতুর্থ এল ক্লাসিকো জয়    

    ফুল টাইম: রিয়াল মাদ্রিদ ৩-২ বার্সেলোনা


     

    একে তো ঘরের মাঠে খেলা, তার ওপর চ্যাম্পিয়নস লিগে বড় বাধা টপকে উড়ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে তাই স্বাগতিকদের পক্ষেই ছিল বেশিরভাগের বাজি। কেনন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার সময়টা যে মোটেও ভালো যাচ্ছিল না, সেই সাথে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বাদ পড়ার ধাক্কা তো ছিলই। অবশ্য এল ক্লাসিকোর আমেজে ঠিকই বার্সা লড়ল সেয়ানে সেয়ানে। লাভ অবশ্য হল না। বিতর্কে ঠাঁসা ম্যাচে আবারও শেষ মুহূর্তের নায়ক জুড বেলিংহাম। ঘরের মাঠে শেষ হাসি হেসে শীর্ষ স্থানে ১১ পয়েন্টের লিড নিয়ে অবস্থান পোক্ত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ।

    ম্যাচে অবশ্য কিছু বুঝে উঠার আগেই রিয়াল মাদ্রিদের জালে বল জড়িয়েছিল বার্সা। রাফিনিয়ার বাঁকানো কর্নার বুঝতে না পেরে লুনিন এগিয়ে এলেও বল ঠেলে দিতে ব্যর্থ হলে সহজেই জাল খুঁজে পান ক্রিস্টেনসেন। সাথে সাথে মাদ্রিদ জবাব দিতে গেলেও সেই যাত্রায় ভিনিসিয়াস বল উড়িয়ে মারেন। তবে ম্যাচে ঠিক কর্তৃত্ব বিস্তার করতে পারছিল না স্বাগতিকরা। এরই মধ্যেই ১৮ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় তারা। ভাসকেজ ক্যানসেলোকে পেরিয়ে বক্সে ঢুকে পড়লে কুবারাসির বাঁধায় বক্সে লুটিয়ে পড়লে পেনাল্টি পেতে দেরি হয়নি। সেখান থেকে বল জালে জড়াতেও ভুল করেননি ভিনিসিয়াস।

    গোলের পর মাদ্রিদ খেলায় ধীরে ধীরে ফিরলেও কর্নার থেকে বারবারই বার্সার কাছে খাবি খাচ্ছিল। ৩০ মিনিটের মাথায় এমন এক কর্নার থেকেই হয় বিতর্ক। আবারও বাঁকানো এক কর্নার থেকে এবার ইয়ামাল মাদ্রিদের পোস্ট বরাবর প্রচেষ্টা চালালে কোনোমতে সেটা বাঁচান লুনিন। লা লিগায় আবার নেই গোল লাইন টেকনোলজি! ভিএআর থেকে যতটুকু বোঝা যায় সেখান থেকে রেফারি সিদ্ধান্ত দেন মাদ্রিদের পক্ষে। 

    ক্ষুব্ধ বার্সা এরপর মাদ্রিদের ওপর মুহুর্মুহু আক্রমণ চালিয়েও সাফল্য পাচ্ছিল না। উলটো স্রোতের বিপরতে ৪০ মিনিটের মাথায় ভিনিসিয়াসের ক্রস থেক রদ্রিগো প্রায় গোল পেয়ে যাচ্ছিলেন। সেই যাত্রায় তিনি পা লাগাতে না পারলে প্রথমার্ধ শেষ হয় সমতায়।

    প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডি ইয়ংয়ের ইনজুরিতে মাঠ ছেড়ে যাওয়াটা বার্সার জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারত। উলটো দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তারাই ম্যাচে ছড়ি ঘুরাতে শুরু করে। ৫৮ মিনিটের মাথায় পেনাল্টির আবেদন করলেও রেফারি বার্সার ডাকে সাড়া দেয়নি। দমে না যাওয়া বার্সা দুই পরিবর্তন করে গোলও পেয়ে যায় ৬৯ মিনিটে। ইয়ামালের দারুণ এক ক্রস লুনিন বেশিদূর ঠেলে দিতে না পারলে তা গিয়ে পড়ে ফারমিন লোপেজের পায়ে। বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে সময় নেননি এই তরুণ। মাদ্রিদের মাঠে এরপর তিনি করলেন বেলিংহামের উদযাপন। সেটাই যেন তাতিয়ে দিল স্বাগতিকদের।

    পাঁচ মিনিটের মধ্যেই নিজেদের দুই পরিবর্তনের ফল পেয়ে যায় মাদ্রিদ। বাঁ প্রান্ত থেকে ভিনিসিয়াসের বাড়ানো ক্রসে পা বাড়িয়ে জাল খুঁজে পান ভাসকেজ। সেখান থেকেই একের পর এক আক্রমণ করেও জয়সুচক গোলের দেখা পাচ্ছিল না মাদ্রিদ। ম্যাচে বরং উত্তাপ বাড়ছিল ক্রমশ। একের পর এক হলুদ কার্ড দেখতে হচ্ছিল দুই দলকেই। যোগ করা সময়ে বল পেয়েই তেড়েফুঁড়ে উপরে উঠে আসেন বদলি ব্রাহিম। দারুণ এক দৌড়ে বার্সার ওপর অতর্কিত আক্রমণের পর ডানে থাকা ভাসকেজকে খুঁজে নিলে মুহূর্তেই বক্সের মাঝে সেটা বাড়িয়ে দেন ভাসকেজ। নিচু ক্রসটা হোসেলু নিজে না নিয়ে আলতো করে পিছে ঠেলে দিলে সেখান থেকে জোরালো ফিনিশে জাল খুঁজে পান বেলিংহাম। আরও একবার এল ক্লাসিকোর নায়ক বেলিংহাম, সেটাও শেষ দিকে এসেই! বার্সার কফিনে বেলিংহামের ঠোকা পেরেকে মাদ্রিদ পেয়ে যায় জয়। সেই সাথে নিজেদের ৩৬-তম লা লিগা শিরোপাটাও যেন চলে আসে তাদের হাতছোঁয়া দূরত্বে।