• অস্ট্রেলিয়ার নিউজিল্যান্ড সফর ২০১৬
  • " />

     

    'গণদাবি'র মুখে আউট!

    'গণদাবি'র মুখে আউট!    

    বহুল ব্যবহৃত ‘কর্মা’ শব্দটাকে আরও এক দফা ক্লিশে করেই বোধহয় এ প্রতিবেদনটা শুরু করা যায়! ক’দিন আগেই হয়ে যাওয়া ট্রান্স-তাসমানিয়ান টেস্ট সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়নের আউটটি না দেয়া যদি নিউজিল্যান্ডের প্রতি ‘অবিচার’ হয়ে থাকে তবে সদ্য সমাপ্ত চ্যাপেল-হ্যাডলি একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজের সমপরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্তে মিচেল মার্শকে আউট ঘোষণার ‘‘নাটকীয়’ সিদ্ধান্তটি অজিদের জন্য ‘কর্মা’ বলাই যায়।

     

     

    আজকের সে ম্যাচ ৫৫ রানে জিতে একদিনের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু মিচেল মার্শকে যদি ক্রিকেট মাঠে নজিরবিহীন ‘গণদাবী মেনে নিয়ে’ সাজঘরে ফেরত না পাঠানো হতো, তবে চিত্রটা উল্টো হবার সমূহ সম্ভাবনাই ছিল।

     

     

    স্বাগতিকদের করা ২৪৬ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডে তখন ৫ উইকেটে ১৬৪ রান, জয়ের জন্য প্রয়োজন ৯৮ বলে ৮৩। ৩৪তম ওভারে ম্যাট হেনরির চতুর্থ বলটার সামনে রক্ষণাত্মকভাবে ব্যাটটা পেতে দিয়েছিলেন মিচেল মার্শ। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বুটে লেগে বলটা সামান্য ভেসে ফিরে যায় হেনরির কাছে, সেটা মাটিতে পড়ার আগে তালুবন্দীও করেন কিউই পেসার। কিন্তু বল মাটি স্পর্শ করেছে ভেবেই কিনা, উইকেটের আবেদনটা অতো জোরালোভাবে করলেন না। আম্পায়ার ইয়ান গোল্ডও তাতে সাড়া দেবার প্রয়োজন বোধ করেন নি।

     

     

    কিন্তু বাঁধ সেধে বসলো সেডন পার্কের গ্যালারি। বড় পর্দায় রিপ্লে দেখে দর্শকদের তুমুল হট্টগোলের মুখে ম্যাট হেনরি আম্পায়ারের কাছে ডেলিভারিটি রিভিউর আবেদন জানান। তবে কোনো বল রিভিউর জন্য নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় মি. গোল্ড সেটি নাকচ করে দেন। কিন্তু দর্শকদের অব্যাহত শোরগোল আর শেষ অব্দি কিউইদের বিদায়ী ক্যাপ্টেন ব্র্যান্ডন ম্যাককালামের অনুরোধের মুখে টিভি আম্পায়ারের শরণাপন্ন হন মাঠে উপস্থিত দুই আম্পায়ার। অতঃপর ডিআরএস প্রযুক্তি ব্যবহারে মার্শকে আউট ঘোষণা করা হয়। এরপর নিয়মিত বিরতিতে বাকি চারটি উইকেট খুইয়ে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।

     

    ঘটনার সময় মাঠে জটলা পাকানো অজিদের ক্ষোভটা টের পাওয়া যাচ্ছিল টিভি পর্দার সামনে থেকেও। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে মাঠ ছেড়ে যান মার্শ, পিঠে ম্যাককালামের সান্ত্বনার হাত সে রাগ কতোটুকু প্রশমিত করতে পেরেছিল বলা কঠিন। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়াতেও এ নিয়ে অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের চাপা অসন্তোষ বলে দেয় ব্যাপারটি অতো সহজে ভুলছে না সফরকারীরা।

     

     

    ম্যাচের সংকটপূর্ণ মুহূর্তে ওই ডেলিভারিটি বড় পর্দায় রিপ্লেতে দেখানো উচিৎ ছিল কিনা, কিংবা মূলত ‘দর্শকদের দাবীর মুখে’ রিভিউ আবেদনের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও টিভি আম্পায়ারের দ্বারস্থ হওয়াটা ক্রিকেটের আইনে কতোটা সিদ্ধ হয়েছে...মার্শের আউটে ক্রিকেটীয় বিতর্ক যে নতুন মাত্রা পেয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।