• বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ ২০১৫
  • " />

     

    বাংলাদেশের ব্যাটিং-ব্যর্থতায় ভারতের সান্ত্বনার জয়

    বাংলাদেশের ব্যাটিং-ব্যর্থতায় ভারতের সান্ত্বনার জয়    

    অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কি কাল হল বাংলাদেশের? আগের দুই ম্যাচের দুর্দান্ত বাংলাদেশকে এদিন ছন্নছাড়া লাগলো ব্যাটিং-বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টেই। টসে জিতে বোলিং নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে সবই বিপক্ষে ছিলো টাইগারদের। ফলশ্রুতিতে শেষ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের ৭৭ রানে হার। ঘরের মাঠে টানা জয়যাত্রাটা ১০ ম্যাচের বেশি নিয়ে যেতে পারলোনা মাশরাফি-বাহিনী। অবশ্য ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিলো বাংলাদেশ (২-১)। 

     

    টানা তিন সিরিজে প্রতিপক্ষকে ওয়াইটওয়াশ করার রেকর্ড এর আগে ছিল ছয়বার, পাঁচটি দলের ছিল এই অর্জন। আজ জিতলে সপ্তমবারের মতো এই ঘটনা দেখতো ওয়ানডে ক্রিকেট। সেই স্বপ্ন নিয়েই মিরপুর স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন হাজারো দর্শক; টেলিভিশন সেট আর অনলাইনে ভিড় জমিয়েছিলেন আরো কোটিখানেক দর্শক। 

     

    বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে মাশরাফি এদিন টসে জিতে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান ভারতকে। অনুশীলনে ইনজুরিতে পড়া তাসকিনের বদলে দলে এসেছিলেন আরাফাত সানি। ভারতীয় দলেও ছিলো দুইটি পরিবর্তন। মুস্তাফিজ শুরু থেকে ওপেনারদের ভুগালেও প্রথম সাফল্য আসে ইনিংসের সপ্তম ওভারে রোহিতকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে। এরপর ধাওয়ান আর কোহলি মিলে ভারতীয় ইনিংস মেরামত করার দায়িত্ব নেন। উচ্চাভিলাষী শট খেলতে গিয়ে কোহলি সাকিবের বলে বোল্ড হলেও ধাওয়ান ছিলেন বেশ সাবলীল। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৫ রান করে ২৭-তম ওভারে মাশরাফির বলে নাসিরের দারুণ এক ক্যাচে সাজঘরে ফিরেন ধাওয়ান।

     

     

    এরপরই মূলত ম্যাচটি বাংলাদেশের মুঠো থেকে বের করে নিয়ে যান ধোনি-রাইড়ু। মূলত সিংগেলস-ডাবলসের উপর ভর করে স্ট্রাইক পরিবর্তন করে ১০০ বলে ৯৩ রানের জুটিতে তারা দিশেহারা করে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ককে। মাশরাফিও তাসকিনের অভাব অনুভব করে নাসির-আরাফাত সানিকে ঠিকমত ব্যবহার করতে পারেননি বোলিংয়ে। ধোনির ৬৯ আর রায়ড়ুর ৪৪ রানের পর শেষদিকে সুরেশ রায়নার ২১ বলে ৩৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে সিরিজে প্রথমবারের মতন তিনশ' রান পেরোয় সফরকারীরা।  দারুণ এক স্লোয়ারে রায়নাকে বোল্ড করার মাধ্যমে তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট (১৩টি) নেয়ার রেকর্ড গড়েন মুস্তাফিজ। বেশ খরুচে হলেও স্বাগতিক দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন মাশরাফি (৩/৭৬)।  

     

     

    ৩১৮ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি। দ্বিতীয় ওভারেই কুলকার্নির বদলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তামিম।  উইকেটের চারদিকে দারুণ সব শট খেললেও আবারো বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হলেন সৌম্য সরকার (৩৪ বলে ৪০)। এরপরে ছোট ছোট কিছু জুটি গড়তে থাকলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। মুশফিক-লিটন-সাকিব-নাসিররা মূলত স্পিনেই ঘায়েল হলেন এদিন। ব্যাটিং পাওয়ারপ্লে-র আগেই বাংলাদেশ হারিয়ে বসে ছয়টি উইকেট। রায়না তুলে নেন তিনটি উইকেট, অশ্বিন শিকার করেন দুইটি। বাংলাদেশের কেউই অর্ধশতকের দেখা পাননি; সাব্বির করেছেন সর্বোচ্চ ৪৩ রান। 

     

     

    ঝড়ো ৩৮ রানের পাশাপাশি ৩ উইকেট তুলে নিয়ে 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' হন সুরেশ রায়না। আর অভিষেকেই ১৩ উইকেট দখলের কারণে অবশ্যসম্ভাবী ভাবেই 'ম্যান অফ দ্য সিরিজ' হলেন মুস্তাফিজুর রহমান।